RNA এর গঠন ও কাজ

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - জীববিজ্ঞান - জীববিজ্ঞান প্রথম পত্র | NCTB BOOK
7.3k
Summary

RNA এর গঠন ও কাজ:

RNA বা রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড প্রধানত প্রোক্যারিওটিক এবং ইউক্যারিওটিক কোষের সাইটোপ্লাজমে পাওয়া যায় এবং এটি DNA সহ নিউক্লিক অ্যাসিড। RNA একটি পলিনিউক্লিওটাইড চেইন দিয়ে গঠিত এবং বিভিন্ন ধরনের নাইট্রোজেন ক্ষারক থাকে। এর রাসায়নিক গঠন উপাদান তিনটি:

  • পেন্টোজ শুগ্যার: RNA তে রাইবোজ আছে।
  • নাইট্রোজেন কাৰক: এনেকার অ্যাডেনিন (A), ইউরাসিল (U), সাইটোসিন (C), গুয়ানিন (G)।
  • ফসফোরিক এসিড: এতে তিনটি হাইড্রক্সিল গ্রুপ এবং দ্বিযোজী অক্সিজেন উপস্থিত।

প্রধান RNA এর প্রকারভেদ:

  • Transfer RNA (tRNA): কোষের ১৫% RNA, প্রোটিন সংশ্লেষণে অ্যামিনো অ্যাসিড স্থানান্তর করে।
  • Ribosomal RNA (rRNA): কোষের ৮০-৯০% RNA, রাইবোজোম তৈরিতে সাহায্য করে।
  • Messenger RNA (mRNA): কোষের ৫-১০% RNA, প্রোটিন সংশ্লেষণের জন্য বার্তা বহন করে।
  • Genetic RNA (gRNA): বংশগতির উপাদান হিসেবে কিছু ভাইরাসে থাকে।
  • Minor RNA: বিভিন্ন প্রোটিনের সাথে মিশে এনজাইমের কাঠামো তৈরি করে।

RNA এর মাধ্যমে প্রোটিন সংশ্লেষণ প্রক্রিয়া:

  1. প্রথমে অ্যামিনো এসিড সক্রিয় হয়ে tRNA এর সাথে যুক্ত হয়।
  2. mRNA রাইবোসোমের সাথে যুক্ত হয়। tRNA A সাইটে যুক্ত হয় এবং পরে P সাইটে চলে যায়।
  3. tRNA একে একে অ্যামিনো অ্যাসিড এনে mRNA এর সাথে যুক্ত করে।
  4. প্রোটিন তৈরি হলে, তা সাইটোপ্লাজমে মুক্ত হয়।
  5. রিলিজ ফ্যাক্টর পলিপেপটাইড শৃঙ্খল মুক্ত করে এবং mRNA রাইবোসোম ত্যাগ করে।

RNA এর গঠন ও কাজঃ বেশিরভাগ প্রোক্যারিওটিক ও ইউক্যারিওটিক কোষে DNA ছাড়াও আর এক রকমের নিউক্লিক অ্যাসিড পাওয়া যায়, যা RNA বা রাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড [Ribonucleic Acid] নামে পরিচিত । RNA কোষের সাইটোপ্লাজমে মুক্ত অবস্থায় এবং রাইবোজোমের সঙ্গে যুক্ত অবস্থায় থাকে । তবে ক্রোমোজোম, মাইটোকন্ড্রিয়া, প্লাষ্টিড প্রভৃতিতেও সামান্য পরিমাণে RNA থাকে।

RNA একটি পলিনিউক্লিওটাইড চেইন দ্বারা গঠিত হওয়া একটি একক সূত্রক চেইনের মত। তবে এ সূত্রাকার দেহটি মাঝে মাঝে সরল ফাঁস গঠন করে থাকে। এটি স্থানে স্থানে কুন্ডলিত অবস্থায় থাকে। এ কুন্ডলিত স্থানগুলোতে সংশ্লিষ্ট নাইট্রোজেন ক্ষারকগুলোর মাঝে DNA এর মত সিঁড়ি সদৃশ হাইড্রোজেন বন্ধনী সৃষ্টি হতে দেখা যায়। তবে ফাঁসহীন অংশে ক্ষারকগুলো বন্ধনহীন অবস্থায় থাকে।

RNA এর রাসায়নিক গঠন উপাদন তিনটি-

১. পেন্টোজ শুগ্যার

২. নাইট্রোজেন ঘটিত ক্ষারক

৩. ফসফোরিক এসিড

১. পেন্টোজ শুগ্যারঃ

পাঁচ কার্বন বিশিষ্ট শুগ্যার বা চিনিকে বলা হয় পেন্টোজ শুগ্যার। RNA তে রাইবোজ শুগ্যার রয়েছে।

২. নাইট্রোজেন ঘটিত ক্ষারকঃ

RNA তে চার ধরনের নাইট্রোজেন ঘটিত ক্ষারক রয়েছে যথা- অ্যাডেনিন (A) , ইউরাসিল (U) , সাইটোসিন (C) , ও গুয়ানিন (G) । অ্যাডেনিন ও গুয়ানিন হলো পিউরিন বেস বা দুই রিং বিশিষ্ট ক্ষারক এবং ইউরাসিল ও সাইটোসিন হলো পাইরিমিডিন বেস বা এক রিং বিশিষ্ট ক্ষারক।

৩. ফসফোরিক এসিডঃ

RNA তে তিনটি একযোজী হাইড্রোক্সিল গ্রূপ ও এটি দ্বিযোজী অক্সিজেন পরমানু নিয়ে গঠিত হয়েছে ফসফোরিক এসিড। এর প্রধান কাজ প্রোটিন সংশ্লেষণ করা তবে এর অন্যান্য কাজের ভিত্তিতে একে প্রধান পাঁচটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথাঃ

Transfer RNA (tRNA): কোষের প্রায় ১৫ ভাগ RNA tRNA এটি সবচেয়ে ক্ষুদ্র আকারে ওজন প্রায় ২৫,০০০ ডাল্টন। এটির একটি বাহু এবং চারটি ফাঁস থাকে। প্রোটিন সংশ্লেষণ এর সময় জেনেটিক কোড অনুযায়ী অ্যামিনো অ্যাসিড কে mRNA অনুতে স্থানান্তর করা এর কাজ। সব tRNA অণুর বেস সিকুয়েন্স একই রকম নয়। বেস সিকুয়েন্সের পার্থক্য এর রাসায়নিক গুনাগুন এর পার্থক্য সৃষ্টি করে। এর উপর ভিত্তি করে একটি অ্যাক্টিভেটিং এনজাইম সঠিক অ্যামিনো এসিড নির্ণয় করে থাকে।

Ribosomal RNA (rRNA): কোষের ৮০-৯০ ভাগ RNA rRNA। এটি সর্বাপেক্ষা স্থায়ী এবং অদ্রবণীয়। রাইবোজোম নামক কোষীয় অঙ্গাণু সৃষ্টিতে একটি অবদান রাখে, যার মাধ্যমে কোষের প্রোটিন সংশ্লেষণ হয়। এটি প্রোটিন এর সাথে যুক্ত হয়ে রাইবোনিউক্লিওপ্রোটিন কণার গঠন করে।

Messenger RNA (mRNA): কোষের মোট RNA এর ৫-১০ ভাগ বার্তাবহ RNA। এরা অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী। আণবিক ওজন ৫ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ ডাল্টন। এটি নির্দিষ্ট প্রোটিন সংশ্লেষণ এর বার্তা নিউক্লিয়াস থেকে সাইটোপ্লাজমে বহন করে এবং রাইবোজোম এবং tRNA এর সাহায্যে নির্দিষ্ট অ্যাসিড অনুক্রমের শৃঙখল তৈরি করে।

Genetic RNA (gRNA): বংশগতিয় RNA এর প্রধান কাজ প্রোটিন তৈরি করা। কিছু কিছু ভাইরাসের দেহে বংশগতির উপাদান হিসেবে কাজ করে। যেমনঃ TMV Virus.

Minor RNA (mRNA): এটি বিভিন্ন প্রোটিনের সাথে মিশে এনজাইমের কাঠামো দান করে এবং এনজাইম হিসেবেও কাজ করে থাকে।

 

RNA যেভাবে প্রোটিন সংশ্লেষন করেঃ

* প্রথমে অ্যামিনো এসিড সিন্থেটেজের প্রভাবে সাইটোপ্লাজমে বিদ্যমান ভিন্ন ভিন্ন অ্যামিনো এসিড ATP এর সাথে যুক্ত হয়ে সক্রিয় হয় এবং সংশ্লিষ্ট tRNA এর 3’ প্রান্তের সাথে সংযুক্ত হয়ে যৌগ গঠন করে।

* এরপর রাইবোসোমের সাথে mRNA সংযুক্ত হয়। এ ক্ষেত্রে রাইবোসোমের বড় এককটি এসে যৌগের সাথে যুক্ত হয়। বড় এককে দুটি সাইট থাকে। যথা-A সাইট ও P সাইট। tRNA প্রথমে A সাইট এ যুক্ত হয় এবং পরে A সাইট খালি করে P সাইটে চলে যায়। খালি A সাইটে পুনরায় অপর একটি অ্যামিনো এসিড সহ tRNA যুক্ত হয়।

* একইভাবে tRNA একটি একটি করে অ্যামিনো এসিড অনু রাইবোসোমে অবস্থিত mRNA এর কাছে আনে mRNA এর যুক্ত করে মুক্ত হয়।

* এভাবে mRNA তে অসংখ্য অ্যামিনো এসিড অনু সংযুক্ত হয়ে যখন প্রোটিন অনু তৈরি হয় তখন রাইবোসোমের mRNA থেকে প্রোটিন অনু মুক্ত হয়ে কোষের সাইটোপ্লাজমে মুক্ত হয়।

* পরবর্তীতে রিলিজ ফ্যাক্টর পলিপেপটাইড শৃঙ্খল মুক্ত করে এবং mRNA রাইবোসোম ত্যাগ করে। এভাবে ট্রান্সলেশন প্রক্রিয়া চলতে থাকে।

Content added || updated By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

mRNA থেকে প্রোটিন তৈরির সময় ট্রান্সলেশন প্রক্রিয়া থেমে যাবে
ট্রান্সক্রিপশন পদ্ধতি বাধাগ্রস্থ হবে
রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পদ্ধতি বাধাগ্রস্ত হবে
mRNA টি RNA তে রূপান্তরিত হবে
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...